পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ – Old Voter ID Card Check
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করবেন ? তবে জানা নেই কিভাবে পুরাতন ভোটার আইডি চেক করতে হয় ? আজকের পোস্টে আমরা কিভাবে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করবেন তা বিস্তারিত জন্য।
পুরাতন সকল ভোটারকে নতুন নিয়ম অনুসারে স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। তবে অনেকেই এখনো নতুন স্মার্ট কার্ড পায়নি। এক্ষেত্রে নতুন স্মার্ট কার্ড পেতে সময় লাগতে পরে।
এরই মধ্যে ভোটার আইডি কার্ড চেক করা প্রয়োজন হতে পারে। আপনি চাইলে অনলাইনে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম জেনে ঘরে বসেই আইডি কার্ড চেক করতে পারেন।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করা খুবই সহজ। এজন্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটার তথ্য প্রদান করে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। একাউন্ট রেজিস্টার করা হলেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য চেক করতে পারবেন।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে যা যা প্রয়োজন
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য যা যা ডকুমেন্টস এবং ইকুইপমেন্ট লাগবে তা হলো –
- Nidw থেকে আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য দুইটি ডিভাইসের প্রয়োজন হবে। ডিভাইস দুইটির যেকোনো একটি থেকে Bangladesh NID Application System এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে এবং অন্য ডিভাইসটি থেকে পেজ ভেরিফাই করতে হবে। মনে রাকবেন যেকোনো একটি ডিভাইসে ফেস ভেরিফিকেশনের জন্য ক্যামেরা থাকা অবশ্যক। যেমন :- অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন
- উভয় ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ থাকা অবশ্যক। রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে প্রথমবার ফেস ভেরিফিকেশন এর প্রয়োজন হবে। দ্বিতীয়বার আইডি কার্ড ডাউনলোড এর ক্ষেত্রে ফেস ভেরিফিকেশন এর দরকার নেই।
- ভোটার নিবন্ধন এর সময় যে মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছিলেন রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সেই নম্বরটি প্রয়োজন হবে।
- একই সাথে ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার অথবা ভোটার স্লিপ নাম্বার থাকতে হবে।
- ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী সঠিক জন্ম তারিখ এবং বর্তমান অস্থায়ী ঠিকানাও প্রয়োজন হবে।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক
আগে সকল ভোটারদের পেপার লেমিনেটিং করা ভোটার আইডি কার্ড দেওয়া হতো। এমন ভোটার আইডি কার্ড এখন আর চলে না। সকলকেই নতুন স্মার্ট ভোটার আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তবে এখনো অনেকেই নতুন স্মার্ট কার্ড পাননি অর্থাৎ পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করছে।
তাছাড়া নতুন স্মার্ট আইডি কার্ড পাওয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে। স্মার্ট আইডি পাওয়ার আগেই বিভিন্ন কারণে পুরাতন ভোটার আইডি চেক করার প্রয়োজন হতে পারে। পুরাতন ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য থাকলে অনলাইনেই পুরাতন ভোটার তথ্য চেক করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করা যাই। পুরাতন কার্ড চেক করার পক্রিয়া বোঝার সুবিধার্তে নিম্নে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হলো। ধাপ গুলো নিম্ন রূপ –
- ধাপ ১ :- Nidw এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন
- ধাপ ২ :- একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
- ধাপ ৩ :- ঠিকানা প্রদান
- ধাপ ৪: মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
- ধাপ ৫ :- NID Wallet অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড
- ধাপ ৬ :- ফেইস ভেরিফিকেশন
- ধাপ ৭ :- পাসওয়ার্ড সেট করা
এই ধাপগুলো অনুসরণ করে সহজেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারবেন।
ধাপ ১ :- Nidw এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। ভোটার নিবন্ধনের সকল তথ্য এই ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে সংরক্ষিত আছে।
ধাপ ২ :- একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভিজিটের পরে একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য প্রথমেই “রেজিস্টার একাউন্ট” বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড নাম্বার এবং জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ বসিয়ে দেওয়া ফর্মটি পূরণ করুন।
কার্ড নাম্বার জানা না থাকে এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড নাম্বার এর পরিবর্তে নিবন্ধনের সময় পাওয়া স্লিপ নাম্বারটি ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন ৮ বা ৯ সংখ্যার ভোটার স্লিপ নাম্বারে NIDFN যোগ করা না থাকলে অবশ্যই ভোটার স্লিপের পূর্বে NIDFN যোগ করে নেবেন। উদাহরণ :- ভোটার স্লিপ নাম্বার 234675438 হয়ে থাকে তবে NIDFN যোগ করে নাম্বারটি হবে NIDFN234675438।
তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রদান করে ফর্মটি পূরণ করা শেষ হলে সিকিউরিটি ক্যাপচা সম্পূর্ণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। আগে থেকে একাউন্ট রেজিস্টার করা থাকলে শুধু জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার অথবা একাউন্ট নেইম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।
ধাপ ৩ :- ঠিকানা প্রদান
আপনার একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন এর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো প্রদান করে ফর্ম পূরণ সম্পূর্ণ হলে আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করতে হবে। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ( NID ) কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদান করুন। ঠিকানায় জেলা, উপজেলা এবং বিভাগ বসাতে হবে। ঠিকানা প্রদান করে ফর্ম পূরণ করা সম্পূর্ণ হলে “পরবর্তী” বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৪: মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন
আপনার সঠিক ঠিকানা প্রদান করার পরেই মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করার প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে ভোটার নিবন্ধনের সময় ব্যবহূত মোবাইল নম্বরটি আসবে। তবে মোবাইল নাম্বার না আসলে নতুন একটি সচল মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে ফর্মটি পূরণ করুন।
মোবাইল নাম্বার বসানো হলে ভেরিফাই করার জন্য বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করলে ব্যবহৃত নাম্বারে বাংলাদেশ এনআইডি সার্ভিস থেকে ছয়টি ডিজিটের একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে। টিপি কোডটি ব্যবহার করে মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
ধাপ ৫ :- NID Wallet অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড
মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করা সম্পন্ন হলে একটি QR কোড সহ পরবর্তী পেজ আসবে।
এ পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আপনার NID Wallet নামক একটি এপ্লিকেশন প্রয়োজন হবে। এখন আপনার এন্ড্রয়েড স্মার্ট ফোনে গুগল প্লেস্টোর এর মাধ্যমে NID Wallet অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে হবে। ডাউনলোড সম্পন্ন হওয়ার পর এপ্লিকেশনটি ওপেন করে আগের ডিভাইসটিতে আসা QR কোডটি আপনার দ্বিতীয় ডিভাইস বা এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে স্ক্যান করতে হবে।
আপনি NID Wallet Application সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে পড়তে পারেন :- NID Wallet কি এবং কিভাবে ?
ধাপ ৬ :- ফেইস ভেরিফিকেশন
QR কোড স্ক্যান করা সম্পূর্ণ হওয়ার পরে অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করে ফেইস ভেরিফাই করতে হবে। এজন্য NID Wallet অ্যাপ থেকে Start Face Scan বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে ক্যামেরা ওপেন করতে হবে। ক্যামেরার সাহায্যে ব্যক্তির মুখোমন্ডলের প্রথমে সোজাসুজি এবং এরপর একটু দানে ও বামে ঘুরিয়ে পেজ ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করতে হবে।
ধাপ ৭ :- পাসওয়ার্ড সেট করা
পাসওয়ার্ড সেট করা এই প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। এ পর্যায়ে ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হলে আপনার প্রথম ডিভাইসটিতে পাসওয়ার্ড সেট করার জন্য আরেকটি নতুন পেজ ওপেন হবে। আপনার অ্যাকাউন্ট ও সকল তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য এবং ফেস ভেরিফিকেশন ইত্যাদি সমস্যা এড়ানোর জন্য পাসওয়ার্ড আবশ্যক।
একাউন্টের সুরক্ষা তে একটি কঠিন পাসওয়ার্ড সেট করা উচিত। পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। মনে রাখবেন পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা হতে পারে।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক করে ডাউনলোড
একাউন্ট রেজিস্টার করা সম্পূর্ণ হলে সক্রিয়ভাবে লগইন হয়ে যাবে। একাউন্ট লগইন করেই একাউন্ট ড্যাশবোর্ড পেয়ে যাবেন। এখানে সবার শেষে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার অপসন পেয়ে যাবেনা। এখন থেকে আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড PDF আকারে ডাউনলোড করে তথ্য চেক করতে পারেন।
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি, আপনি কিভাবে আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ডটি অনলাইনে ডাউনলোড করতে পারেন। আমরা বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি যেগুলো আপনাকে সহজেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ডটি অনলাইনে ডাউনলোড করতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কে আরো পোস্ট পড়তে চান তাহলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন এবং আপনি আপনার মূল্যবান মতামতটি আমাদের সাথে কমেন্টে শেয়ার করতে পারেন।
FAQ’s
ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হারিয়ে গেলে আপনার নিকটস্থ থানায় জিডি করে ভোটার আইডি নাম্বার দিয়ে হারানো কার্ডের জন্য আবেদন পত্র উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৬।
জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে প্রথমে থানাই জিদি করে জিদির কপি সহ অনলাইনে NID Card Re-Issue আবেদন করতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন এবং সকল বায়োমেত্রিক্স তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করলে আবেদনের ১ মাসের মধ্যেই জাতীয় পরিচয় পত্র হাতে পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র বিষয়ক বিভিন্ন সেবা পেয়ে যাবেন।
আপনার ভোটার আইডি কার্ড এ কোন তথ্য ভুল থাকলে ভোটার আইডি কার্ড তথ্য সংশোধন আবেদন করে উপযুক্ত কারন দিয়ে ভুল তথ্য পরিবর্তন করা যাই।
আমি আইডি-কার্ডে মায়ের নাম পরিবর্তনের জন্য ফাইল জমা করেছি প্রায় পঁচিশ দিন হয়। কিন্তু এখও ক্যাটাগরি পড়েনি। আমার আইডি কার্ডটি বেশ প্রয়োজন। এখন কি করতে পারি?