ভোটার অঙ্গীকারনামা লেখার নিয়ম 2024 – ভোটার অঙ্গিকরনামা PDF
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অঙ্গীকারনামা প্রয়োজন? কিভাবে অঙ্গীকারনামা লিখতে হয় তা জানেন না? আজকের এই পোস্টে কিভাবে সঠিক নিয়মে এবং সহজে ভোটার অঙ্গীকারনামা লিখবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সাধারণত যাদের নতুন ভোটার হওয়ায় সুযোগ হলেও ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করেননি মূলত তাদের নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য একটি অঙ্গীকারনামা লিখে জমা দিতে হয়।
অনেকেই বিভিন্ন কারণে জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড এর জন্য সময় মতন আবেদন করতে পারেনা। বিদেশে থাকা বা আবেদনের প্রক্রিয়া না জানা বিভিন্ন সমস্যায় অনেকের ভোটার আবেদনের স্বাভাবিক বয়স পার হয়ে যায়। সাধারণত ৩০ বছর এর বেশি বয়সী সকলকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য আবেদন করতে হলে অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হয়।
৩০বছর বয়সের বেশি বয়সীদের নতুন ভোটার আবেদনের ক্ষেত্রে তারা কখনো পুূর্বে ভোটার নিবন্ধন করেনি এই মর্মে অঙ্গীকারনামা লিখে অন্যান্য ডকুমেন্টস এর সাথে জমা দিতে হয়। এজন্য অনেক ঝামেলাও পোহাতে হয়। তাই আমাদের সকলের উচিত ৩০বছর হওয়ার আগে ভোটার আবেদন সম্পূর্ণ করা।
ভোটার অঙ্গীকারনামা মূলত কি?
কোন ব্যক্তি ইতিপূর্বে কখনোই ভোটার নিবন্ধন করেননি এবং ভবিষ্যতে একাধিকবার ভোটার হওয়ার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকারকে মূলত ভোটার অঙ্গীকারনামা বলে।
ব্যক্তির নাম, ঠিকান, পিতা-মাতার নাম এবং কেন ভোটার হতে পারেননি, তার উপযুক্ত কারণ উল্লেখ করে এবং একই সাথে তিনি যে আগে কখনো ভোটার হননি তা নিশ্চিত করে একটি অঙ্গীকার লিখতে হয়।ভোটার অঙ্গীকারনামা মূলত ব্যক্তিকে একের অধিক বার ভোটার নিবন্ধন করা থেকে বিরত রাখার জন্য করা হয়।
ভোটার অঙ্গীকারনামার প্রয়োজনীয়তা
অনেকেরই ভোটার আবেদনের সময় ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন ভুল তথ্য থেকে যায়। এ কারণে তারা নতুন ভোটার আবেদন করতে চাই। তবে একই ব্যক্তি দুবার ভোটার আবেদন করতে পারে না। একাধিকবার ভোটার নিবন্ধন করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এভাবে ভোটার আইডি কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধন করা যাই না। বরং ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করে অনলাইনে ভোটার তথ্য সংশোধন করা যায়।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি প্রয়োজন তা বিস্তারিত জানতে আরো পড়তে পারেন :- Documents For NID Correction।
কেউ যাতে ভুল করে একাধিকবার ভোটার আবেদন না করে এবং ভোটার তথ্য ভুল হলে নতুন ভোটার আবেদন করার চেষ্টা না করা নিশ্চিতের জন্যেই ভোটার অঙ্গীকারনামা প্রদান করতে হয়।
এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি একাধিকবার আইডি কার্ড করতে চাই তবে নতুন আইডি কার্ড তৈরীর সময় বায়োমেট্রিক তথ্য ভেরিফাই করার সময়ই ব্যক্তি ধরা পড়ে যাবে। এর জন্য জরিমানা ও শাস্তিও পেতে হবে। তাই আমাদের উচিত ৩০বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই নতুন ভোটার নিবন্ধন করে রাখা।
ভোটার অঙ্গীকারনামা লিখার নিয়ম
তুলনামূলক বেশি বয়সে আবেদনকারের ক্ষেত্রে নতুন ভোটার আইডির আবেদন করতে গেলে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর সাথে একটি অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হয় যে আপনি আগে কখনো ভোটার নিবন্ধন করেননি এবং একই সাথে ভোটার নিবন্ধন এতদিনে না করতে পারার কারণ কি।
এই অঙ্গীকারনামায় আরও বলা হয়েছে যে ব্যক্তি পরবর্তীতে দুবার ভোটার আবেদন করেছে তা প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে যে কোনো আইনগত পদক্ষেপ মেনে নিতে হবে।
ভোটার অঙ্গীকারনামা নিশ্চিত করে যে কেউ দ্বিতীয়বারের মতন ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে কিনা। কিভাবে ভোটার অঙ্গীকার নামা লিখবেন তার নিয়ম জানা থাকলে সহজেই ঘরে বসে ভোটের অঙ্গীকার নামা লিখে ফেলতে পারেন। নিম্নে ভোটার অঙ্গীকারনামা লেখার বিস্তারিত পদ্ধতি বোঝার সুবিধার্থে ভোটার অঙ্গীকার নামার একটি নমুনা দেওয়া হল :-
অঙ্গীকারনামা ফরম
নতুন ভোটার অঙ্গীকার নামা কিভাবে লিখবেন তার একটি নমুনা নিম্নে দেখানো হলো। নির্দিষ্ট ফরমেট অনুসরণ করে তথ্য প্রদান করতে হবে। একইসাথে কেন সময় মতন ভোটার আবেদন করেননি তার উপযুক্ত কারণ লিখে অঙ্গীকার করতে হবে যে আপনি দুবার ভোটার আবেদনের চেষ্টা করেছেন তা প্রমাণ হলে নির্বাচন কমিশন করতে গৃহীত আইনগত ব্যবস্থা মেনে নিতে আপনি বাধ্য।
ভোটার অঙ্গিকারনামা
এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে, আমি আবেদনকারির নাম পিতা – আবেদনকারির পিতার নাম, মাতা – আবেদনকারির মাতার নাম, গ্রাম/মহল্লাঃ- আবেদিনকারির গ্রাম বা মহল্লার ঠিকানা, পোষ্টঃ – আবেদনকারির পোস্ট নাম্বার , উপজেলাঃ – আবেদনকারির উপজেলা ঠিকানা, জেলাঃ – আবেদনকারির জেলা ঠিকানা, অত্র এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা।
লেখা-পড়ার কারনে দীর্ঘ সময় বাড়ির বাহিরে অবস্থান করার কারনে সময়মত ভোটার আবেদন করতে পারিনি। এজন্য নতুন ভোটার হিসেবে আবেদন নিবন্দিত হওয়ার জন্য আপনার দপ্তরে বিনিত আবেদন দাখিল করছি। আমি আরো অঙ্গীকার করছি যে, আমি ইতোপূর্বে বাংলাদেশর কোথায়ও ভোটার হইনি এবং এই প্রথমবার ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করছি। এবং যেহেতু একাধিকবার নতুন ভোটার হওয়া আইনত দন্ডণীয় অপরাধ সেহেতু আমি দ্বৈত ভোটার হলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্ৰহণ করতে পারবে এবং আমি তা মানতে সর্বদা বাধ্য।
এখন, আমাকে নতুন ভোটার করার জন্য আপনার নিকট সবিনয় অনুরোধ করছি।
( আবেদনকারির স্বাক্ষর )
নাম- ( আবেদনকারির নাম ),
পিতা- ( আবেদনকারির পিতার নাম ),
গ্রাম / মহল্লা – ( আবেদনকারির গ্রাম বা মহল্লার ঠিকানা ) ,
উপজেলা – ( আবেদনকারির উপজেলা ঠিকানা )
ভোটার অঙ্গীকারনামা ফরম এর PDF কপি ডাউনলোড
অনেক নতুন ভোটারই কিভাবে ভোটার অঙ্গীকারনামা লিখতে হয় তা জানে না। ভোটার অঙ্গীকার নাম লিখতে ভুল হলে পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
যাতে ভোটার অঙ্গীকার নামাজ কিভাবে লিখতে হয় তার সহজে সকল বুঝতে পারে ভোটার অঙ্গীকারনামার একটি পিডিএফ এবং ওয়ার্ড ফাইল ফাইল শেয়ার করা হলো।
পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড লিংক :-
উপরে দেওয়া ডাউনলোড লিংক থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন মতন পিডিএফ বা ওয়ার্ড ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ফাইলটি ডাউনলোড করে আপনার নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, ঠিকানা এবং ভোটার না হতে পারার উপযুক্ত কারণ দিয়ে অঙ্গীকারনামা লিখুন। তারপর উক্ত অঙ্গীকারনামা প্রিন্ট করে নতুন ভোটার আবেদনের সময় অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর সাথে জমা দিন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি ফাইল অর্থাৎ ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় তা জানা না থাকলে নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে জেনে নিতে পারেন। বা নতুন ভোটার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন :- নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে।
শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি, ভোটার অঙ্গিকারনামা কি এবং কিভাবে ভোটার অঙ্গিকারনামা লিখবেন। আমরা নতুন ভোটার আবেদন এর জন্য কিভাবে ভোটার অঙ্গিকারনামা লিখবেন এবং কেনো ভোটার অঙ্গিকারনামা লিখতে হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সহজেই নতুন ভোটার আবেদন করতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কে আরো নতুন পোস্ট করতে চান তাহলে ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন। এবং আপনি আপনার মূল্যবান মতামত বা কোন প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
FAQ’s
আপনার নতুন ভোটার আবেদন করা সম্পুূর্ণ হলে নির্দিষ্ট সময়ে কার্ডের ছবি এবং ফিংগারপ্রিন্ট এর জন্য SMS করা হবে। এসময় অন্যান্য ডকুমেন্তস এর সাথে ভোটার অঙ্গিকারনামাটিও জমা দিতে হবে।
সাধারণত যারা ১৬-২০ বছরের মোধ্যে ভোটার আবেদন সম্পুূর্ণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে কোন অনঙ্গিকারনামা প্রয়োজন না। তবে ৩০ বছর এর বেশি বয়সিদের আবেদন এর জন্য অঙ্গিকারনামা প্রয়োজন হবে।
কোন ব্যক্তি ইতিপূর্বে কখনোই ভোটার নিবন্ধন করেননি এবং ভবিষ্যতে একাধিকবার ভোটার হওয়ার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই মরবে লিখিত অঙ্গীকারকে মূলত ভোটার অঙ্গীকারনামা বলে।
কেউ যাতে ভুল করে একাধিকবার ভোটার আবেদন যাতে না করে এবং ভোটার তথ্য ভুল হলে নতুন ভোটার আবেদন সংশোধন করার চেষ্টা না করা নিশ্চিতের জন্যেই ভোটার অঙ্গীকারনামা প্রদান করতে হয়।