পুরাতন ভোটার আইদি কার্ড ডাউনলোড

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম 2024

আপনার পুরাতন ভোটার আইডি কার্ডটি হারিয়ে গেছে অথবা নষ্ট হয়ে গেছে ? পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে চান ? তবে জানেন না কিভাবে করবেন ? আজকের পোস্টে কিভাবে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন তা বিস্তারিত জানবো। 

নতুন ভোটার আইডি কার্ড খুব সহজেই অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায়। তবে যারা ২০১৮ সাল বা তার পূর্বে ভোটার হয়েছেন তাদের ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হলে থানায় জিডি করে আইডি কার্ড রি – ইস্যু আবেদন করতে হবে। 

বিভিন্ন কারণে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রয়োজন হতে পারে। আপনি পুরাতন ভোটার হলেও এখনো আইডি কার্ড না পেলে অথবা কোনো কারণে আইডি কার্ডটি হারিয়ে গেলে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয়। 

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমেই থানায় এনআইডি কার্ড হারানো নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। এরপর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services nidw gov bd তে  একাউন্ট রেজিস্টার করে এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু আবেদন করতে হবে। আবেদনটি অনুমোদন হলে আপনার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। 

যাদের আইডি কার্ড চুরি হয়ে গিয়েছে বা হারিয়ে গিয়েছে তাদের জন্য আজকের পোস্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজকের পোস্টে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সঠিক নিয়ম জন্য।  

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে ডাউনলোড করার প্রয়োজন হয়। পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমেই থানায় জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড নাম্বার সহ এনআইডি কার্ড হারানো নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি অর্থাৎ জিডি করতে হবে। 

এরপর জিডি কপি সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services nidw gov bd তে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু আবেদন করে ২৩০ টাকা রি-ইস্যু ফি পরিষদ করে জিডির কপি প্রদান করতে হবে। আবেদনটি অনুমোদন হলে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। 

আরও পড়ুন  NID দিয়ে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন হয়েছে চেক করুন 2024

আমরা ৭ টি ধাপ অনুসরণ করে পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবো। ধাপ গুলো নিম্নরূপ :- 

  • থানায় সাধারণ ডায়েরি ( জিডি ) করা 
  • নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে একাউন্ট রেজিস্টার করা 
  • এনআইডি রি-ইস্যু আবেদন করা 
  • আইডি কার্ড রি-ইস্যু ফি প্রদান করা 
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করা 
  • রি-ইস্যু আবেদন সাবমিট করা 
  • পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড   

নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো :- 

থানায় সাধারণ ডায়েরি ( জিডি ) করা 

জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড হারিয়ে গেলে অথবা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলে প্রথমেই আইডি কার্ড হারানো নিয়ে সাধারণ ডায়েরি অর্থাৎ জিডি করতে হবে। থানায় এরূপ জিডি করতে কোনো প্রকার ফি লাগে না।

জিডিতে আবেদনকারীর নাম, জন্ম তারিখ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড নাম্বার উল্লেখ করতে হবে। আবেদনটি চাইলে হাতে লেখা হতে পারে তবে কম্পিউটারে লেখা হলে ভালো হয়। জিডি আবেদন জমা দেয়ার পূর্বে একই কপি সংগ্রহ করে রাখবেন।  

জিদি ( পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড )
জিদি নমুনা ( Source – reportbd.net )

জিডি জমা দেয়ার পর থানা থেকে দায়িত্ত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম, আপনার জিডি নাম্বার, দায়িত্ত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার সিল ও সাক্ষর এবং তারিখ লিখে দেওয়া হবে। 

জিডিটি অবশ্যই স্ক্যান করে রাখতে হবে। স্ক্যান করতে না পারলে সম্পূর্ণ জিডির ভালো ছবি হলেও চলবে। এই স্ক্যান করা কপি বা ছবি পরবতীতে রি-ইস্যু আবেদন করার সময় প্রয়োজন হবে। 

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে একাউন্ট রেজিস্টার করা 

জিডি করা সম্পূর্ণ হলে এবার নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services nidw gov bd তে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। পূর্বে একাউন্ট রেজিস্টার করে থাকলে তবে শুধু ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। 

Services.nidw.gov.bd ( পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড )
Services.nidw.gov.bd

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে একাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য ফেইস ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হবে। এজন্য NID Wallet নামক একটি এপ্লিকেশন প্রয়োজন হবে। NID Wallet সম্পর্কে আরো জানতে পড়তে পারেন :- NID Wallet কি ও যেভাবে এনআইডি ওয়ালেট ব্যবহার করবেন ২০২৪। 

আপনি এপ্লিকেশনটি Google Play Store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন। IOS  ইউজের হলে App Store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।  

কিভাবে নতুন একাউন্ট রেজিস্টার করবেন তা ধাপে ধাপে নিম্নে দেখানো হলো :- 

  • প্রথমেই services nidw gov bd তে একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য ভিজিট করুন নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। 
  • এখানে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিন। এবং যথাযথভাবে সিকিউরিটি ক্যাপচাটি পূরণ করুন। 
  • অথপর বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করতে হবে। ঠিকানা প্রদান করার পর ফেইস ভেরিফিকেশন এর জন্য একটি QR Code আসবে।  
  • এখন আপনার NID Wallet এপ্লিকেশনটি প্রয়োজন হবে। এপ্লিকশটি ওপেন করে QR Code টি স্ক্যান করতে হবে।  
  • QR Code স্ক্যান করা হলে ফেইস ভেরিফাই করতে বলা হবে। ফেইস ভেরিফাই করার জন্য মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করে নির্দেশনা অনুযায়ী ফেইস স্ক্যান করতে হবে। 
  • ফেইস ভেরিফাই করা হলে একাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। পাসওয়ার্ড সেট করার পর একাউন্ট তৈরী হয়ে যাবে। এরপর পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্ট এ লগইন করুন। 
আরও পড়ুন  NID Card Form নাম্বার ভুল দেখলে করণীয় ২০২৪

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট services nidw gov bd সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরো পড়তে পারেন :- NID বিষয়ক সকল সেবা যেভাবে পাবেন। 

এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু আবেদন

 নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে একাউন্ট রেজিস্টার করে লগইন করার পরে একাউন্ট ড্যাশবোর্ড পেয়ে যাবেন। এখন থেকে রি-ইস্যু অপসন নির্বাচন করতে হবে। পরবর্তী পেইজে এডিট অপশনে যেতে হবে। এরপর একটি পপ আপ আসবে। এখান থেকে বহাল অপসন নির্বাচন করুন।  

NID Card Re-Issue
NID Card Re-Issue

এরপর আবেদন সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রয়োজন হবে। তথ্য গুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হলে পরবর্তী অপসন নির্বাচন করুন। 

আইডি কার্ড রি-ইস্যু ফি প্রদান করা 

জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড রি-ইস্যু আবেদন সম্পূর্ণ হলে রি-ইস্যু ফি প্রদান করতে হবে। বর্তমান পেইজ থেকে আপনাকে রি-ইস্যু ফি প্রদান করতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড রি-ইস্যু আবেদন ফি সাধারণভাবে ভ্যাট সহ ৩৪৫ টাকা এবং জরুরিভাবে করতে চাইলে ৫৭৫ টাকা প্রয়োজন হবে। 

NID Card Re-Issue Fee
NID Card Re-Issue Fee

আপনি চাইলে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাঙ্কিং সেবার মাধ্যমে প্রদত্ত ফি পরিষদ করতে পারেন। বিকাশ মোবাইল ব্যাঙ্কিং সেবার মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারেন। 

এজন্য প্রথমেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট ড্যাশবোর্ড থেকে পে বিল > সরকারি ফি > NID Services  অপশনে যান। এখান থেকে আবেদনের ধরন সিলেক্ট করে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে কি পরিশোধ করতে পারেন। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করা 

এনআইডি কার্ড রি-ইস্যু আবেদন করার জন্য থানায় পূর্বে করা জিডির কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। জিডির কপিটি স্ক্যান করতে হবে। স্ক্যান করতে না পারলে সাধারণভাবে ভালো ছবি তুলে নিতে হবে। ছবিটি অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে। 

স্ক্যান করা কপি অথবা মোবাইলে তোলা ছবি হলে ফাইল সাইজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ফাইলটি অবশ্যই ১০০ KB বা এর কম হতে হবে। ১০০ KB এর বোরো সাজের ফাইল হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। 

আরও পড়ুন  NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম 2024

রি-ইস্যু আবেদন সাবমিট করা 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তথ্যাদি এবং প্রজোয্য ফি সফলভাবে পরিষদ করা সম্পূর্ণ হলে এখন আবেদনটি সাবমিট করতে হবে। আবেদনটি সাবমিট করার পর আপনার সম্পূর্ণ আবেদনের একটি সামারি দেখতে পাবেন। 

এখানে আবেদন সম্পির্কে সকল তথ্য পেয়ে যাবে। সাধারণভাবে আবেদনটি অনুমোদন হলে ৭ – ১৫ দিন সময় লাগে। 

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড   

আবেদনটি সফলভাবে সাবমিট করার পর আপনার প্রদান করা মোবাইল নাম্বারে সময় মতো SMS এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে আবেদন অনুমোদন হয়েছে নাকি হয়নাই। 

আবেদনটি অনুমোদন হলে আপনার নির্বাচন কমিশনের একাউন্ট এ লগইন করুন। লগইন করলে একাউন্ট ড্যাশবোর্ড পেয়ে যাবেন। এখন থেকে হোম মেনুতে যেতে হবে। এখানে ডাউনলোড অপসন পেয়ে যাবেন। ডাউনলোড অপশনে যেয়ে আপনার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। 

শেষ কথা 

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি, কেন পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রয়োজন হতে পারে, আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে কি কি লাগবে এবং কিভাবে আইডি কার্ড ডউনলোড করবেন। আমারা কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচণা করেছি যা আপনাকে সহজেই পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে সাহায্য করবে। 

আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কে আরো নতুন পোস্ট করতে চান তাহলে ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন। এবং আপনি  আপনার মূল্যবান মতামত বা কোন প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টে শেয়ার করতে ভুলবেন না।  

FAQ’s 

পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে কত টাকা লাগে ?

জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড রি-ইস্যু আবেদন ফি সাধারণভাবে ভ্যাট সহ ৩৪৫ টাকা এবং জরুরিভাবে করতে চাইলে ৫৭৫ টাকা প্রয়োজন হবে। 

রি-ইস্যু ফি বিকাশ এর মাধ্যমে কিভাবে পরিষদ করবো ?রি-ইস্যু ফি বিকাশ এর মাধ্যমে কিভাবে পরিষদ করবো ?

এজন্য প্রথমেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট ড্যাশবোর্ড থেকে পে বিল > সরকারি ফি > NID Services  অপশনে যান। এখান থেকে আবেদনের ধরন সিলেক্ট করে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিয়ে কি পরিশোধ করতে পারেন। 

থানায় জিডি করতে কি টাকা লাগে ?

জি না। থানায় সাধারণ জিডি করতে কোনো টাকা লাগে না। 

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।