ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে 2024

আপনার ভোটার আইডি কার্ডে কোন তথ্য ভুল রয়েছে? ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে হবে? তবে জানেন না ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে? আজকের পোস্টে আমরা ভোটার আইডি কার্ডের ভুল তথ্য সংশোধন করতে কি কি প্রয়োজন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।

ভোটার আইডি কার্ডে ভুল থাকলে এবং সংসারের জন্য অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করে প্রযোজ্য সংশোধন ফি জমা দিয়ে খুব সহজেই জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) এর যে কোন তথ্য সংশোধন করা সম্ভব।

তবে আইডি কার্ডের তথ্য এভাবে সংশোধন করার জন্য কিছু ডকুমেন্টসও প্রয়োজন হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে আজকের পোস্টে সে বিষয়ে বিস্তারিত  জানবো।বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন করতে সকল বাংলাদেশী নাগরিকদের জাতীয়তার পরিচয় এর জন্য যে সনদপ্রদান করে তাকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ড বলে।

নতুনভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করার সময় ভুল করে ভুল তথ্য জাতীয় পরিচয় পত্রে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। জাতীয় পরিচয় পত্রে এভাবে ভুল তথ্য যুক্ত হলে তা সংশোধন করতে হয়। দ্রুত সংশোধন না করলে পরবর্তীতে আরো অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।

আমাদের সবারই মোটামুটি জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল তথ্য থাকতে পারে। এই তথ্য সংশোধন করতে আবার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হয়। আজকের পোস্টে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা বিস্তারিত জানবো। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে

ভোটার আইডি কার্ডে কি তথ্য সংশোধন করবেন তার ওপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য শিক্ষা সার্টিফিকেট বা সনদ, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়।

এছাড়া কার্ড এর ঠিকানা সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনার নাগরিকত্বের সনদ, জন্ম নিবন্ধনের কপি, ইউটিলিটি বিল এর কপি যেমন বিদ্যুৎ বিল বা পানির বিল, এবং জমির পর্চার কপি প্রয়োজন হয়।

আবার আপনার ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা সার্টিফিকেট, আপনার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপি প্রয়োজন হবে। 

ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে সংশোধন করতে হয় তা জানা নাও থাকতে পারে। ভুল ভাবে আইডি কার্ড সংশোধন করলে পরবর্তীতে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এজন্য কিভাবে সংশোধন করতে হই তার সঠিক নিয়ম জেনেও সংশোধন করা উচিত্‍। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আর পড়তে পারেন – ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন 2024.

আরও পড়ুন  How To Download NID Card 2024 - ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন

ভোটার আইডি কার্ড এর তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন একটি নাগরিক সাধারণত মোট চারটি ক্যাটাগরিতে নিজস্ব ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে পারে। ক্যাটাগরি গুলো হলো :- 

  • নিজের বা পিতামাতার নাম সংশোধন
  • ঠিকানা সংশোধন
  • রক্তের গ্রুপ সংশোধন
  • এবং জন্ম তারিখ সংশোধন 

বোঝার সুবিধার্থে নিম্নে ক্যাটাগরি গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

রক্তের গ্রুপ সংশোধন 

কোন কারণে রক্তের গ্রুপ ভোটার আইডি কার্ডে ভুল থাকলে বা রক্তের গ্রুপ না থাকলে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদনের মাধ্যমে রক্তের গ্রুপ সংশোধন করে দিতে হয়। ব্যক্তির রক্তের গ্রুপ সংশোধন করতে  নিকটস্থ হাসপাতাল থেকে রক্ত পরীক্ষা করে নিতে হবে।  এটি অবশ্যই বাংলাদেশের রেজিস্টার্ড কোন ক্লিনিক বা হাসপাতাল থেকে করাতে হবে। 

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা শেষ হলে প্রাপ্ত রিপোর্টের ছবি তুলে অথবা স্ক্যান করে স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে।

নিজের নাম সংশোধন

ভোটার আইডি কার্ডে বিভিন্ন কারণে নিজের নাম ভুল হতে পারে। বিবাহের পরেও অনেকের নাম পরিবর্তন হয়। এক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন করে সঠিক তথ্য দিতে হয়। মনে রাখবেন ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধনের আবার তিনটি ভিন্ন ধরনের রয়েছে। এগুলো হলো নিজের এবং পিতামাতার আংশিক নাম সংশোধন, ও নিজে এবং পিতামাতার সম্পূর্ণ নাম সংশোধন। বোঝার সুবিধার্থে সকল ধরনের ব্যাখ্যা করা হলো।

নিজের নাম সংশোধন (আংশিক)

জাতীয় পরিচয় পত্রে নিজের নামের কিছু অংশ অর্থাৎ আংশিক নাম সংশোধন করার জন্য বোর্ড পরীক্ষার সনদ যেমন JSC / SSC / HSC সার্টিফিকেট, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিয়ের কাবিননামা ও ড্রাইভার লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এরও প্রয়োজন হতে পারে। 

এ সকল ডকুমেন্ট এর ছবি বাস স্কেন্ড কপি জমা দিতে হবে। আংশিক নাম সংশোধন আপনি সাধারণ উপজেলা পর্যায়ে সম্পন্ন করতে পারবেন।

নিজের নাম সংশোধন (সম্পূর্ণ) 

অনেকেরই জাতীয় পরিচয় পত্রে অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ডের পুরো নাম এর সাথে বিভিন্ন সার্টিফিকেট বা অন্যান্য জায়গায় নামের মিল থাকে না। এতে অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়। 

যেমন জমিজমা, রেজিস্ট্রেশন ভিসা ইত্যাদি তৈরি সময় নাম সঠিক না থাকলে তৈরি করা অনেক সময় সম্ভবই হয় না। আপনার সংখটা নাম সংশোধন করতে হলে বেশ কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। নিম্নে জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পূর্ণ নাম সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের একটি তালিকা দেয়া হলো :- 

  • পাসপোর্ট
  •  ড্রাইভিং লাইসেন্স
  •  শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র বা সার্টিফিকেট
  •  ডিজিটাল জন্ম সনদ
  •  সন্তানের জাতীয় পরিচয় পত্র
  •  এমপিও  এর কপি
  •  উপজেলা নির্বাচন অফিসরের প্রতিবেদন
আরও পড়ুন  পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - Old Voter ID Card Check

উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো থাকলে সংশোধন আবেদন করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের সম্পূর্ণ নাম সংশোধন করতে পারেন। 

পিতা/মাতার নাম সংশোধন

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ডে পিতামাতার নামে সাধারণত দুই ধরনের ভুল হয়ে থাকে। একটি হলো পিতা-মাতার আংশিক নামে ভূলএবং আরেকটি হলো সম্পূর্ণ নামে ভুল।উভয় ধরনের ভুল সংশোধনের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকা লাগে।

তবে সাধারনভাবে পিতা মাতার নামের বানান বা সম্পূর্ণ নাম সংশোধন করতে শিক্ষা সনদ এবং জন্ম সনদ অবশ্যই থাকা লাগে। এগুল ছারাও যে যে ডকুমেন্তস প্রয়োজন হবে তার একটি তালিকা নিম্নে দেয়া হল :- 

  • পিতা / মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড
  • ভাই, বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র  ( NID ) কার্ড
  • বিবাহের কাবিনামা 
  • শিক্ষা সার্টিফিকেট 

জন্ম তারিখ সংশোধন

নতুন ভোটার আইডি কার্ড অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন এর ক্ষেত্রে আরেকটি বড় ভুল হলো জন্ম নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয় পত্রে দেয়া জন্ম তারিখ ভিন্ন হওয়া। আবার বিভিন্ন সনদ এর সাথেও জন্ম নিবন্ধন এর অমিল লক্ষ করা যাই। 

জন্ম নিবন্ধন
জন্ম নিবন্ধন

এর ফলে ভবিষ্যতে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি বানাতে সমস্যার মুখে পরতে হয়। আমাদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় পরিচয় পত্রে ( NID )  জন্ম তারিখ ভুল থাকলে তা সংশোধন করে ফেলা। জন্ম তারিখ সংশোধন এর জন্য প্রয়োজনিও ডকুমেন্তস এর একটি তালিকে নিম্নে দেয়া হলো :-

  • পাসপোর্ট
  • ডিজিটাল ১৭ সংখার জন্ম সংশোধন 
  • পারিবারিক সনদ এর কপি
  • বয়স প্রমাণ এর জন্য রিপোর্ট
  • MPO Sheet এর কপি
  • চাকরি করলে চাকরির আইডি কার্ড এর কপি
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স
  • যদি থাকে তবে ভাই বা বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র

তালিকায় উল্লিখিত ডকুমেন্তস গুলো থাকলেই জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন করে জন্ম তারিখ সংশোধন করে নিতে পারেন। যদি আপনার জন্ম তারিখেও ভুল তথ্য থাকে তবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন করে জন্ম নিবন্ধন এর তথ্য সংশোধন করে নিতে পারেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত যানতে পরতে পারেন :- অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন আবেদন 2024 

ঠিকানা সংশোধন

অনেকের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্র এর ঠিকানা গুরুত্বপূর্ণ নাও মনে হতে পারে। তবে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা ভোটার আইডি কার্ড এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

আরও পড়ুন  পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম 2024

তাছারা পাসপোর্ট বা এর মতন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সনদ বা সার্টিফিকেট বানানর সময় ঠিকানা প্রয়োজন হই এবং এই সময় জাতীয় পরিচয় পত্র এর ঠিকানা যদি ভুল থাকে তবে আবেদন বাতিলও হয়ে যেতে পারে। 

এজন্য আমাদের উচিৎ জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা ভুল থাকলে তা যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করে নেয়া। জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা সংশোধন এর জন্য প্রয়জনিও কাগজপত্রের একটি তালিকা নিম্নে দেয়া হল :-

  •  বাড়ির উটিলিটি বিলের কপি যেমন বিদ্যুৎ বা পানির বিল এর কপি
  • ১৭ সংখার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • ট্যাক্স রশিদ বা জমির খাজনা আদায়ের রশিদ

এনাইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন

পূর্বে আলোচিত সকল সেবা অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে করা গেলেও জাতীয় পরিচয় পত্র এর ছবি অনলাইনে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। 

NID Card
Source – citrokor.com

তবে যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি এতই অস্পষ্ট যে পরিচয় নির্ধারণ করা যাচ্ছে না তাহলে ছবি পরিবর্তন এর জন্য আপনার উপজেলা নির্বাচন এর অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। দায়িত্তপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রয়োজনিও ডকুমেন্তস দিয়ে এবং ছবি পরিবর্তন এর কারন দিয়ে ছবি পরিবর্তন করতে পারবেন। 

আপনার দেয়া কারন উপযুক্ত হলে নির্বাচন কমিশন ছবি পরিবর্তন এর জন্য প্রয়োজনিও পদক্ষেপ নিবে। 

শেষ কথা 

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি, ভোটার আইডি অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড সংশোধন করার জন্য কি কি প্রয়োজন হয়। আমরা  ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যা আপনাকে সহজেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে সাহায্য করবে। 

আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কে আরো নতুন পোস্ট করতে চান তাহলে ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন। এবং আপনি  আপনার মূল্যবান মতামত বা কোন প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টে শেয়ার করতে ভুলবেন না।  

FAQs

ভোটার আইডি কার্ড এর ছবি কি অনলাইনে পরিবর্তন করা যায়? 

জি না। ভোটার আইডি কার্ডের ছবি অনলাইনে পরিবর্তন করা যাই না।

ভোটার আইডি কার্ডে কি নিজের সম্পূর্ণ নাম সংশোধন করা যাই?

জি হ্যা। ভোটার আইডি কার্ডে নিজের সম্পুূর্ণ নাম সংশোধন করা যাই। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?

সাধারণভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য শিক্ষা সার্টিফিকেট বা সনদ, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়।

জাতীয় পরিচয় পত্রের সম্পূর্ণ নাপ সংশোধন এর জন্য কি কি ডকুমেন্তস প্রয়োজন?

জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পূর্ণ নাম সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের একটি তালিকা দেয়া হলো :- পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র বা সার্টিফিকেট, ডিজিটাল জন্ম সনদ, সন্তানের জাতীয় পরিচয় পত্র, এমপিও  এর কপি, উপজেলা নির্বাচন অফিসরের প্রতিবেদন।

Similar Posts

2 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।